Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

তিতির পালন পদ্ধতি

তিতির শোভাবর্ধনকারী গৃহপালিত পাখি হলেও বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে পালনের যথেষ্ট সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে। এটাকে অনেকেই চীনা মুরগি বলে। প্রায় ৭০০ বছর আগে তিতির প্রথমে জন্মস্থান আফ্রিকায় গৃহপালিত পাখি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ৩০০ বছর আগে ব্রিটিশ শাসন আমলে ভারতবর্ষে আসে। তিতির খাদ্য ও উৎপাদন খরচ কম। তাই তিতির পালন লাভজনক। তিতিরের মাংস ও ডিম সুস্বাদু। ইহা খাওয়া হালাল। তিতির প্রায় বিপন্ন হচ্ছে। তিতির খুব শান্ত। তিতির পালন খুব সহজ।
 

পরিচিতি
বাংলাদেশের তিতির ধূসর পালক। পালকে সাদা ফোটা ফোটা দাগ থাকে। এ ছাড়াও হালকা ধূসর ও সাদা রঙের তিতির আছে। ডিমের রঙ ঘন বাদামি, ছোট ছোট দাগ থাকে, লাটিম আকৃতির ও ওজন ৩৮-৪৪ গ্রাম। পুরুষ তিতির মাথার মুকুট স্ত্রীর চেয়ে বড়। পায়ের রঙ কালচে। পূর্ণাঙ্গ পুরুষের ওজন ১.৫-২ কেজি, স্ত্রীর ওজন ১-১.৫ কেজি। ডিম প্রাকৃতিক ও কৃত্রিমভাবে ফুটানো যায়। শতকরা ৭০ ভাগ বাচ্চা ফুটে। ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফুটানো ভালো। ডিম ফুটতে ২৭-২৮ দিন সময় লাগে। ডিম দেশি মুরগি দিয়েও ফুটানো যায়। ডিমের খোসা শক্ত। ডিম ছোট। প্রজনন মৌসুম হচ্ছে মার্চ-অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তিতির অলস; নড়াচড়া ধীরে ধীরে করে।

 

সুবিধা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। প্রাকৃতিক খাদ্য খায় বলে খাদ্য খরচ কম। উন্নতমানের ঘর দরকার হয় না। খুব বেশি জিনিসপত্র লাগে না। ডিম ভাঙার সম্ভাবনা কম থাকে। দৈহিক বৃদ্ধি দ্রুত হয়। ৬-৭ মাস বয়সে ডিম পাড়ে। বছরে ১০০-১২০টি ডিম দেয়। ৫-৬ মাসে খাওয়া (১-১.৫ কেজি হয়) ও বিক্রির উপযোগী হয়। দেশি মুরগির সাথে একত্রে পালন করা যায়। তিতির খোলামেলা পরিবেশে, আবদ্ধ ও অর্ধআবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায়। তিতির সারা বছর পালন করা যায়।

 

অসুবিধা
বাচ্চার মৃত্যুর হার খুব বেশি। ডিমে তাপ দেয়ার ক্ষেত্রে মা তিতির যতœশীল হলেও ১-২টি ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর অবশিষ্ট ৬-৭টি ডিম রেখে চলে যায়। অর্থাৎ ডিমে আর তাপ দেয় না। এরা ঝোপঝাড়, জঙ্গল পছন্দ করে বলে শিয়াল, কুকুর, চিল, বাজপাখি, বেজি, সজারু ইত্যাদি প্রাণী এদের ধরে খায়। লিটারে পালনের ক্ষেত্রে বাচ্চাগুলো লিটারের ময়লা খায়। ফলে পেটে সমস্যা হয়। বাচ্চাদের লাইসিন ও সালফারযুক্ত এমাইনো এসিড বেশি প্রয়োজন হয়। তবে মেঝেতে লিটার না দিয়ে পাটের বস্তা ব্যবহার করতে হয়।

 

পালন পদ্ধতি
তিতির মুক্ত, অর্ধমুক্ত ও আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায়। আবদ্ধ অবস্থায় পালনের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়। তিতিরের ঘর বাঁশ, বেত, কাঠ, টিন, ছন, খড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা যায়। ২-৩ ফুট ওয়াল করে ওপরে নেট দিয়ে টিনের চালের ঘর তৈরি করলে দীর্ঘদিন টেকসই হয়। ঘর আলো বাতাস পূর্ণ স্থানে করতে হয়। ঘর প্রতিদিন পরিষ্কার রাখতে হয়। স্যাঁতসে্যঁতে যাতে না হয়।


০-৪ সপ্তাহের বয়সের তিতির জন্য ০.৫ বর্গফুট ও ৫-৮ সপ্তাহের বয়সের প্রতিটি তিতির জন্য ০.৭ বর্গফুট, ৯-১৩ সপ্তাহের তিতির জন্য ১ বর্গফুট, পূর্ণবয়স্কের জন্য ২-২.৫ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন। তিতির খাঁচায় পালন করা যায় না।
খাদ্য
দেশি মুরগির মতো সব খাবার তিতির খায়। মুক্ত পালনের ক্ষেত্রে বাইরে পড়ে থাকা খাদ্য খায়। দানাদার শস্য, ভাত, শাকসবজির উচ্ছিষ্টাংশ, ভুসি, কুঁড়া, ঘাস, লতাপাতা,
পোকামাকড় ইত্যাদি কুড়িয়ে খায়। আবদ্ধ ও অর্ধমুক্ত পালনের জন্য ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির ক্রয় করা খাদ্য বা ফিডার খাওয়াতে হয়। দৈনিক ১১৮-১২১ গ্রাম খাদ্য খায়। বাড়ন্ত তিতিরের সাপ্তাহিক খাদ্য ও পানি গ্রহণের পরিমাণ নিচের তালিকায় দেয়া হলো ঃ

 

খাদ্য প্রস্তুতকরণ
তিতির খাদ্যের স্টার্টার (০-৪ সপ্তাহ) মিশ্রণ হচ্ছে- গমচূর্ণ ৩০%, ভুট্টাচূর্ণ ১৮%, চালের কুঁড়া ১৪%, তিলের খৈল ৯%, ফিসমিল ১৮%, নারিকেলের খৈল ১১%, ঝিনুকচূর্ণ ১%, লবণ ০.৬% ও ভিটামিন ও মিনারেলস ০.৪%। দৈহিক ওজন, খাদ্য গ্রহণ ও খাদ্য রূপান্তর দক্ষতার (ঋঈজ) ভিত্তিতে তিতিরের উৎকর্ষতার বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ ঃ

 

তাপমাত্রা ব্যবস্থাপনা
তিতির বাচ্চা ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে না। এজন্য বাচ্চাকে ব্রুডিংয়ে প্রথম সপ্তাহে বেশি তাপ দিতে হয়। ১ম থেকে ৩য় সপ্তাহ পর্যন্ত ব্রুডিং তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪র্থ থেকে ৫ম সপ্তাহ পর্যন্ত ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হয়। এরপর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা যায়। ব্রুডারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য হিটার বা বাল্ব ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্রুডার হাউজ মুরগির ব্রুডার হাউজের মতো তৈরি করতে হয়।


রোগবালাই
তিতিরের রোগবালাই কম হয়। গোলকৃমি হলে ডিম উৎপাদন কমে ও পাতলা মল ত্যাগ করে। রক্ত আমাশয় হলেÑ রক্ত মিশ্রিত মলত্যাগ করে, ওজন কমে, মুখম-ল ফ্যাকাশে হয়। ট্রাইকোমোনিয়াসিস হলেÑ ওজন কমে, ঝুঁটি কালো হয়, মুখ থেকে লালা ঝরে।

 

মুরগির খামারের সম্প্রসারণের কারণে ও খাওয়ার অভ্যাস কম থাকার জন্য তিতির পালন দেশে কমে যাচ্ছে। অথচ মুরগির চেয়ে এর রোগবালাই কম হয়, ডিম বেশি পাড়ে, ওজন বেশি হয়, উৎপাদন খরচ কম ও দেখতে সুন্দর। এজন্য তিতির পালন করা লাভজনক। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিতির নিয়ে গবেষণা হচ্ছে ও তিতিরের একটি খামার আছে। এখান থেকে বাচ্চা নিয়ে অনেকেই তিতির পালন করছে। তিতির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।


সহকারী অধ্যাপক, শহীদ জিয়া মহিলা কলেজ, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল, মোবাইলঃ ০১৭১১-৯৫৪১৪৩


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon